পেটের চর্বি কমানোর ৯টি সহজ উপায়
পেজ সূচিপত্রঃ পেটের চর্বি কমানোর ৯টি সহজ উপায়
১. সকালে গরম পানি দিয়ে দিন শুরু করুন
পেটের চর্বি কমানোর জন্য সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর অনেকক্ষণ উপবাস অবস্থায় থাকে। এই সময় এক গ্লাস হালকা গরম পানি পান করলে শরীরের মেটাবলিজম ধীরে ধীরে জেগে ওঠে। গরম পানি হজম প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে, শরীরে জমে থাকা টক্সিন বের করে দেয়। অনেকেই এতে লেবুর রস বা এক চামচ মধু মিশিয়ে খান এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও মেলে, যা চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। আমি ব্যক্তিগতভাবে কয়েক মাস ধরে এই অভ্যাস মেনে চলেছি, ফলাফল পেট হালকা লাগতে শুরু করেছে।
২. চিনিযুক্ত পানীয় বাদ দিন
আমরা অনেক সময় ভাবি এক গ্লাস কোমল পানীয় বা ঠান্ডা কফি খাওয়ায় তেমন কিছু হবে না। কিন্তু এগুলোতে থাকে প্রচুর চিনি ও খালি ক্যালোরি। দিনে কয়েকবার এসব পানীয় পান করলে আপনার শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি জমে, যা ধীরে ধীরে পেটের মেদ বাড়ায়। এর বদলে আপনি লেবু পানি, ডাবের পানি, অথবা ঘরে তৈরি ফলের স্মুদি খেতে পারেন। এগুলো শুধু পুষ্টিকর নয়, বরং গরমের দিনে শরীর ঠান্ডা রাখতেও সাহায্য করে।
৩. থালার অর্ধেক সবজি রাখুন
প্রতিদিনের খাবারে শাকসবজি বাড়ানো শুধু পেটের মেদ কমাতেই নয়, বরং সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। সবজি ফাইবারসমৃদ্ধ, যা হজম ভালো করে এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে। আপনি যদি দুপুর ও রাতের খাবারের সময় থালার অর্ধেক অংশে রান্না করা সবজি বা সালাদ রাখেন, তাহলে অজান্তেই ক্যালোরি কম খাওয়া হবে। আমি শুরুতে একেবারে অভ্যস্ত ছিলাম না, কিন্তু ধীরে ধীরে সবজি খাওয়া সহজ হয়ে গেছে।
৪. হাঁটা সহজ কিন্তু কার্যকর ব্যায়াম
জিমে সময় বা অর্থ খরচ করার সুযোগ না থাকলেও হাঁটা সবার জন্য সহজ। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সকালবেলা রাস্তায় বা পার্কে হাঁটলে শুধু পেটের মেদই কমবে না, বরং শরীর চাঙ্গা থাকবে সারাদিন। আমি প্রায়ই অফিসে লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করি এটিও ক্যালোরি পোড়ানোর সহজ উপায়।
৫. প্রোটিনে ভরসা রাখুন
প্রোটিন শুধু মাংসপেশি গঠনেই নয়, বরং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, মাছ, মুরগি, ডাল এসব খেলে দীর্ঘ সময় ক্ষুধা লাগে না। এতে অতিরিক্ত নাস্তা খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। বিশেষ করে সকালের নাস্তায় প্রোটিন রাখলে সারা দিন এনার্জি লেভেল ভালো থাকে।
৬. রাতে দেরি করে খাওয়া কমান
রাত ৯টার পর ভারী খাবার খাওয়া হজমের জন্য ভালো নয়। খাওয়ার পর শরীর তখন বিশ্রামে চলে যেতে চায়, কিন্তু তখন যদি ভারী খাবার দেন, সেটা চর্বি হিসেবে জমতে শুরু করে। তাই শোবার অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করার চেষ্টা করুন। আমি এটা মানা শুরু করার পর থেকেই ঘুমের মানও অনেক ভালো হয়েছে।
৭. স্ট্রেস কমান
দুশ্চিন্তা শরীরের জন্য সরাসরি ক্ষতিকর। স্ট্রেসে কর্টিসল নামক হরমোন বেড়ে যায়, যা পেটের মেদ জমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কিছু সময় নিজের পছন্দের কাজের জন্য রাখুন—যেমন বই পড়া, গান শোনা বা ধ্যান। আমি রাতে ঘুমানোর আগে ১০ মিনিট গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করি, এতে মন শান্ত হয়।
৮. পর্যাপ্ত ঘুম
কম ঘুম শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। এতে ক্ষুধা বেড়ে যায়, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই প্রতিদিন অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা ভালো ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ঘুমানোর আগে মোবাইল বা টিভি কম ব্যবহার করলে দ্রুত ঘুম আসে।
৯. পেটের আলাদা ব্যায়াম করুন
প্ল্যাঙ্ক, ক্রাঞ্চেস, লেগ রেইজ এসব ব্যায়াম পেটের মেদ কমাতে খুব কার্যকর। শুরুতে হয়তো কঠিন লাগতে পারে, কিন্তু ধীরে ধীরে সময় ও সংখ্যা বাড়ান। সপ্তাহে ৩-৪ দিন এই ব্যায়াম করলে কয়েক মাসেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
Scroll Tips 24 এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url