সস্তায় বান্দরবান ট্যুর বাজেট ফ্রেন্ডলি ভ্রমণ পরিকল্পনা

                                                  
বাংলাদেশের পাহাড়ি সৌন্দর্যের কথা উঠলেই বান্দরবানের নাম সবার আগে চলে আসে। সবুজ পাহাড়, কুয়াশায় মোড়া সকাল, ঝরনার ঠান্ডা পানি আর আদিবাসী সংস্কৃতির মেলবন্ধন সব মিলিয়ে বান্দরবন এক অসাধারণ জাইগা 



অনেকের ধারণা এখানে ঘুরতে গেলে খরচ অনেক বেশি হবে সেটা সঠিক । তবে পরিকল্পনা করলে খুব কম বাজেটেই দারুণ একটি ট্যুর করা যায়। আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে এমন এক সস্তায় বান্দরবান ট্যুরের গল্প শেয়ার করছি, যা হয়তো আপনাকেও পাহাড়ের কাছে নিয়ে যাবে

পেজ সূচিপত্রঃসস্তায় বান্দরবান ট্যুর বাজেট ফ্রেন্ডলি ভ্রমণ পরিকল্পনা

যাত্রার শুরু  রাতের বাসের অভিজ্জাব

ঢাকা থেকে রাত ১০টার দিকে Non-AC বাসে রওনা দিলাম। বাস আমার পছন্দনা তাও ঐটা তে গেলাম কারন খরচ কম। টিকিট ভাড়া পড়ল ৮৫০ টাকা। জানালার বাইরে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তা, মাঝে মাঝে ঠান্ডা হাওয়া ঢুকে যাচ্ছিল। চলার পর সকালে বান্দরবান শহরে পৌঁছে গেলাম

থাকার জায়গা  গেস্ট হউসের অভিজ্ঞতা 

শহরের ভেতরে একটা ছোট গেস্ট হাউসে উঠলাম। রুম ভাড়া মাত্র ৫০০ টাকা, কিন্তু জানালা খুললেই চোখে পরে পাহাড়ের গা বেয়ে নামা সকালের কুয়াশা। আমি ভেবেছিলাম এই দৃশ্যের জন্যই যেন এখানে আসা। 

প্রথম দিনের ঘোরাঘুরি নীলাচল আর শৈলপ্রপাত

নীলাচলে উঠতেই মনে হচ্ছিল, আমি যেন মেঘের ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছি। প্রবেশ ফি মাত্র ৫০ টাকা, কিন্তু দৃশ্যের দাম অমূল্য এ জাইগা টা কাও কখন ভুলবে না জারা আসবে তারা চিরকাল মনে রাখবে । এরপর শৈলপ্রপাতের ঠান্ডা পানিতে পা ডুবিয়ে অনেকক্ষণ কাটালাম এ যেন প্রাকৃতিক ফ্রেশনার।

খাবার স্থানীয় স্বাদের আনন্দ

দুপুরে গেলাম কাছের এক লোকাল রেস্টুরেন্টে। ঐখানেও পাহাড় এর সুন্দর দৃশ দেখে মুগ্ধ হলাম। ভাত, ডাল, শাক, আর ছোট মাছের ঝোল সব মিলিয়ে ১২০ টাকা। স্বাদে যেন গ্রামের বাড়ির রান্না। বিকেলে পাহাড়ি পিঠা আর চা খেয়ে সন্ধ্যার হাওয়া উপভোগ করলাম। যারা আসবেন তারা খাওার জন্য বেশি টাকা আনবেন তাহলে মজা আর বেশী হবে ।

দ্বিতীয় দিনের অভিযান  নীলগিরি, প্রান্তিক লেক, মেঘলা

নীলগিরির পথে যাওয়ার সময় প্রতিটি বাঁকে নতুন দৃশ্য অপেক্ষা করছিল। উপরে উঠে চারপাশের পাহাড়, মেঘ, আর বাতাস  অপুরুপ সুন্দর দৃশ্য সব মিলিয়ে এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। এরপর প্রান্তিক লেক ও মেঘলা ঘুরলাম, প্রতিটির প্রবেশ ফি ৩০–৫০ টাকার মতো। কিছু কিছু জাইগাই টাকা বেশি লাগতে পারে ।

স্থানীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া

বান্দরবানে ট্রিপে গেলে স্থানীয় মারমা, চাকমা, ম্রো, বম জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা দেখার সুযোগ মিস করা উচিত নয়। তাদের হাসিমুখ, পোশাক, আর সহজ সরল জীবনযাপন ভ্রমণের স্মৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করে।

শপিং সস্তায় সুন্দর জিনিস

শহরের বাজারে হাতে বোনা শাল, পাহাড়ি ব্যাগ, রঙিন কাপড়, আর বাঁশের তৈরি জিনিস পাওয়া যায়। ৫০০-১০০০ টাকা থাকলে আপনি অনেক কিছু নিতে পারবেন আর পরিবার এর জন্য কিছু নিতে হলে অনেক টাকা খরচ হবে ।

ভ্রমণ টিপস  বাজেট কমানোর কৌশল

  • অফ-সিজনে গেলে হোটেল ভাড়ায় ভালো ছাড় পাওয়া যায়।

  • বড় গ্রুপে গেলে গাড়ি রিজার্ভ করে শেয়ার খরচে যাওয়া সাশ্রয়ী।

  • স্থানীয় রেস্টুরেন্টে খেলে খাবারের খরচ অনেক কমে যায়।

  • নিজস্ব পানির বোতল বহন করলে বারবার কিনতে হয় না।

মোট খরচ  অবাক করা সাশ্রয়

যাতায়াত, থাকা, খাওয়া, আর ঘোরাঘুরি মিলিয়ে তিন দিনের বান্দরবান ট্যুরে আমার মোট খরচ হয়েছিল প্রায় ৫০০০ টাকা। বাজেট কম হলেও আনন্দে একটুও ঘাটতি ছিল না। কিন্তু বাজেট একটু বেশি হলে আনন্দ আরও বেশি ববে ।

শেষ কথা

পাহাড়ের সৌন্দর্য, মানুষের আন্তরিকতা আর প্রকৃতির শান্ত পরিবেশ সব মিলিয়ে বান্দরবান এমন এক জায়গা, যা একবার গেলে মনে গেঁথে যায় চিরকাল। কম বাজেটে হলেও, সঠিক পরিকল্পনা থাকলে এই ভ্রমণ আপনার জীবনের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা হতে পারে। তাই সময় নষ্ট না করে ব্যাগ গুছিয়ে ফেলুন, পাহাড় আপনাকে ডাকছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Scroll Tips 24 এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url