১০ হাজার টাকা নিয়ে কি কি ব্যবসা শুরু করা যাই তা জেনে নিন
১০ হাজার টাকা নিয়ে কি কি ব্যবসা শুরু করা যাই অনেকেই মনে করেন ব্যবসা শুরু করতে বড় অঙ্কের মূলধন প্রয়োজন, কিন্তু এটি সবসময় সত্য নয়।
সামান্য মূলধন দিয়েও সঠিক পরিকল্পনা ও পরিশ্রম থাকলে ভালো একটি উদ্যোগ নেওয়া যায়। বর্তমান সময়ে দেশে ছোট ব্যবসার সুযোগ অনেক বেড়ে গেছে। তাই কম খরচে ব্যবসা শুরু করা সম্ভব এবং ধীরে ধীরে বড় আকারে নেওয়া যায়।
পেজ সূচীপত্রঃ ১০ হাজার টাকা নিয়ে কি কি ব্যবসা শুরু করা যাই
- ১০ হাজার টাকা নিয়ে কি কি ব্যবসা শুরু করা যাই
 - ছোট পরিসরে ফাস্টফুড ব্যবসা
 - মোবাইল রিচার্জ ও বিকাশ এজেন্ট
 - অনলাইন রিসেলার বা ছোট ই-কমার্স
 - ফুড ডেলিভারি বা হোমমেড ফুড ব্যবসা
 - হ্যান্ডমেড জুয়েলারি বা হস্তশিল্প বিক্রি
 - ঘরে তৈরি খাবার বিক্রি
 - ছোট স্ক্রিপ্ট ও কনটেন্ট রাইটিং সার্ভিস
 - ছোট লাইব্রেরি সার্ভিস
 - ছোট গার্মেন্টস বা কাপড়ের হোমসেলিং
 - শেষ কথা
 
১০ হাজার টাকা নিয়ে কি কি ব্যবসা শুরু করা যাই
১০ হাজার টাকা নিয়ে কি কি ব্যবসা শুরু করা যাই তা ভেবে অনেকেই বিভ্রান্ত হন। তবে ছোট বাজেটে শুরু করার মতো কিছু সহজ ব্যবসা আছে যেগুলো কম খরচে চালানো সম্ভব। যেমন, ছোট পরিসরে অনলাইন রিসেলিং, খাবারের ব্যবসা, অথবা হস্তশিল্প সামগ্রী বিক্রি করা। এসব উদ্যোগ শুরু করতে খুব বেশি জায়গা বা জনবলের দরকার হয় না, ফলে ঝুঁকিও তুলনামূলকভাবে কম থাকে।ছোট ব্যবসা শুরু করার আগে নিজের আগ্রহ এবং বাজারের চাহিদা বুঝে নেওয়া জরুরি। কারণ, কোন পণ্য বা সেবা মানুষের কাছে বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে তা বোঝা গেলে সহজে গ্রাহক পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, এখন অনলাইনে কাপড় বা কসমেটিক্স বিক্রির চাহিদা অনেক বেশি। তাই চাইলে ঘরে বসেই পণ্য সংগ্রহ করে অনলাইনে বিক্রি শুরু করা যায়।
এই ধরনের ব্যবসায় সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, প্রাথমিক খরচ কম লাগে। ১০ হাজার টাকার মধ্যে সহজেই কিছু পণ্য সংগ্রহ করা যায় এবং ধীরে ধীরে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ব্যবসা বড় করা সম্ভব। তাছাড়া, ব্যবসার শুরুতে বেশি চাপ নিতে হয় না, ফলে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পাওয়া যায়।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই বাজেটের মধ্যে ব্যবসা শুরু করলে ব্যর্থ হলেও বড় ক্ষতি হওয়ার ভয় থাকে না। বরং অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে আরও ভালোভাবে এগোনো যায়। তাই যারা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, তাদের জন্য এই সুযোগ হতে পারে প্রথম ধাপ।
ছোট পরিসরে ফাস্টফুড ব্যবসা
ফাস্টফুড ব্যবসা আজকাল বেশ জনপ্রিয় একটি উদ্যোগ। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ফাস্টফুডের চাহিদা অনেক বেশি। মাত্র ১০ হাজার টাকার মতো বাজেটে ছোট পরিসরে এই ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। যেমন, সমুচা, সিঙ্গারা, বার্গার বা স্যান্ডউইচ বানিয়ে লোকাল এলাকায় বিক্রি করা যায়।শুরুর দিকে বাড়ির রান্নাঘর থেকেই এই ব্যবসা চালানো যায়। খাবার প্রস্তুত করতে প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনতে গেলে বাজেটের বড় অংশ খরচ হয়ে যাবে, তবে লাভ আসতে শুরু করলে ব্যবসা বাড়ানো সহজ হয়। স্থানীয় বাজারে এবং স্কুল, কলেজ বা অফিস এলাকায় এই ধরনের খাবারের ভালো চাহিদা থাকে।
খাবারের মান ও স্বাদ ভালো হলে দ্রুত গ্রাহক তৈরি হয়। অনেকেই আজকাল ফেসবুক বা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে হোমমেড ফুড ডেলিভারির ব্যবসা করছেন। আপনি চাইলে সেভাবেও শুরু করতে পারেন। এতে প্রচার বাড়ে এবং নতুন গ্রাহক পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।অল্প টাকায় শুরু করা ফাস্টফুড ব্যবসা ধীরে ধীরে বড় আকার ধারণ করতে পারে। একসময় চাইলে দোকান ভাড়া করে সেটিকে রেস্টুরেন্টে রূপান্তর করা সম্ভব। তাই যারা দ্রুত লাভজনক ও জনপ্রিয় ব্যবসা খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ বিকল্প হতে পারে।
আরও পরুনঃপ্রতি সপ্তাহে ৪০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করুন
মোবাইল রিচার্জ ও বিকাশ এজেন্ট
মোবাইল রিচার্জ ও বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা বর্তমানে গ্রামে হোক কিংবা শহরে, সব জায়গাতেই বেশ লাভজনক। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মোবাইল রিচার্জ করে এবং বিকাশ, নগদ বা রকেটের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে। তাই ১০ হাজার টাকা নিয়ে কি কি ব্যবসা শুরু করা যাই এর মধ্যে এটি অন্যতম সহজ ও জনপ্রিয় উদ্যোগ।এই ব্যবসা শুরু করতে আপনার শুধু একটি ছোট্ট দোকান অথবা রাস্তার পাশে টেবিল-চেয়ার থাকলেই চলে। বিকাশ বা নগদ এজেন্ট হতে হলে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়, আর সেই প্রক্রিয়া খুব জটিল নয়। প্রাথমিক মূলধন দিয়ে আপনি লেনদেন শুরু করতে পারবেন। গ্রাহক যত বাড়বে, আপনার কমিশন আয়ও তত বাড়বে।
এ ধরনের ব্যবসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ঝুঁকি কম। টাকা লেনদেন সবসময় চলতে থাকে, তাই গ্রাহক কম হওয়ার ভয় থাকে না। অনেক সময় অনলাইন বিল পেমেন্ট, মোবাইল ডাটা রিচার্জ বা টিকিট বুকিং সার্ভিসও একসাথে দেওয়া যায়। এতে আয়ের উৎস আরও বেড়ে যায়।শুরুতে হয়তো আয় খুব বেশি হবে না, তবে ধীরে ধীরে গ্রাহক সংখ্যা বাড়লে এটি একটি ভালো ইনকামের মাধ্যম হতে পারে। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় এজেন্ট সেবার চাহিদা বেশি থাকে, যেখানে অনেকেই ব্যাংক ব্যবহার করতে অসুবিধায় পড়েন।
অনলাইন রিসেলার বা ছোট ই-কমার্স
বর্তমান সময়ে অনলাইন ব্যবসার জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। এখন মানুষ ঘরে বসেই বাজার করছে, পোশাক কিনছে, এমনকি গৃহস্থালির ছোটখাটো জিনিসপত্রও অর্ডার করছে। তাই অনলাইন রিসেলার হিসেবে কাজ করা একটি লাভজনক উদ্যোগ হতে পারে। ১০ হাজার টাকা নিয়ে কি কি ব্যবসা শুরু করা যাই তার মধ্যে এটি একটি সহজ ও কম খরচের পরিকল্পনা।
শুরু করার জন্য আপনাকে আলাদা দোকান ভাড়া নিতে হবে না। শুধু একটি স্মার্টফোন, ইন্টারনেট কানেকশন এবং ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি শুরু করা যায়। আপনি চাইলে পাইকারি বাজার থেকে সস্তায় মাল কিনে রাখতে পারেন অথবা ড্রপশিপিং মডেলেও কাজ করতে পারেন। এতে পণ্য স্টক না রেখেই অর্ডার অনুযায়ী সরবরাহ করা সম্ভব হয়।
এই ব্যবসার সবচেয়ে ভালো দিক হলো, আপনার টার্গেট গ্রাহক সংখ্যা বিশাল। পোশাক, প্রসাধনী, গৃহস্থালি পণ্য, শিশুদের খেলনা বা ইলেকট্রনিক গ্যাজেট সব ধরনের জিনিসই বিক্রি করা যায়। সঠিকভাবে মার্কেটিং করলে দিনে কয়েক ডজন অর্ডার পাওয়া সম্ভব। প্রথমে হয়তো লাভ কম হবে, তবে ধীরে ধীরে গ্রাহক সংখ্যা বাড়লে আয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করা এই ব্যবসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। সময়মতো ডেলিভারি দেওয়া, মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করা এবং গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এসব বিষয় যত ভালোভাবে করবেন, আপনার ব্যবসা তত দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। ভবিষ্যতে চাইলে এটি বড় আকারে ই-কমার্স সাইট হিসেবেও গড়ে তোলা সম্ভব।
ফুড ডেলিভারি বা হোমমেড ফুড ব্যবসা
খাদ্য মানুষের জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ, আর ভিন্ন স্বাদের খাবারের প্রতি আকর্ষণ কখনোই কমে না। কম খরচে ব্যবসার আইডিয়া শহরাঞ্চলে বিশেষ করে অফিসপাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা বা হোস্টেলগুলোতে সহজ, স্বাস্থ্যসম্মত এবং ঘরোয়া খাবারের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই ছোট পরিসরে হলেও হোমমেড ফুড ডেলিভারি শুরু করা লাভজনক হতে পারে। কম বাজেট থেকে শুরু করার মতো ব্যবসা পরিকল্পনা গুলির মধ্যে এটি অনেক জনপ্রিয়।প্রথমে ঘরের রান্নাঘর থেকেই শুরু করা যায়। অল্প কিছু রান্নার উপকরণ কিনলেই হবে, আর মূলত যা প্রয়োজন তা হলো ভালো রান্নার দক্ষতা। যেমন ভাত, মাংস, মাছ, ডাল বা হালকা নাস্তার প্যাকেজ তৈরি করে অনলাইনে বা পরিচিতদের মাধ্যমে প্রচার করতে পারেন। ছোট পরিসরে প্রতিদিন ২০–৩০ জন গ্রাহক পেলেও ভালো আয়ের সুযোগ থাকে।
এই ধরনের ব্যবসার সুবিধা হলো এতে আপনার গ্রাহক খুব দ্রুত বিশ্বস্ত হয়ে যায়। কেউ যদি একবার আপনার খাবার পছন্দ করে ফেলে, তবে তারা নিয়মিত অর্ডার করতে থাকবে। অনেক সময় ছাত্রছাত্রী বা কর্মজীবী মানুষ বাইরে গিয়ে খাবার খেতে না চেয়ে হোম ডেলিভারি বেছে নেন। এতে একদিকে তারা সময় বাঁচাতে পারেন, অন্যদিকে স্বাস্থ্যকর খাবারও পান।ভবিষ্যতে এই ব্যবসা বড় আকারে নেওয়া সম্ভব। চাইলে মেন্যুতে বৈচিত্র আনতে পারেন যেমন বিশেষ উৎসবে কেক, বিরিয়ানি বা ফাস্টফুড যুক্ত করা যায়। এছাড়া বিভিন্ন ফুড ডেলিভারি অ্যাপ যেমন ফুডপ্যান্ডা, হাংরিনাকি বা উবার ইটস-এর সঙ্গে যুক্ত হলে আপনার ব্যবসার প্রসার আরও দ্রুত হবে। ধীরে ধীরে নিজস্ব ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি তৈরি করা সম্ভব, যা দীর্ঘমেয়াদে আপনাকে একটি সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
হ্যান্ডমেড জুয়েলারি বা হস্তশিল্প বিক্রি
হাতের তৈরি জুয়েলারি এবং হস্তশিল্পের চাহিদা আজকাল বেড়ে গেছে। ঘরে বসে অল্প মূলধন দিয়ে এই ধরনের ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। ছোট আকারে তৈরি করা গয়না বা ক্রাফট সামগ্রী স্থানীয় বাজারে, অনলাইন বা বন্ধুদের মাধ্যমে বিক্রি করা যায়। এটি একটি লাভজনক উদ্যোগ, বিশেষ করে যারা সৃজনশীল ও শিল্পমুখী। তাই যারা নতুন উদ্যোক্তা, তাদের জন্য এটি একটি কম খরচে ব্যবসার আইডিয়া।শুরু করতে খুব বেশি জায়গা বা বড় ইনভেস্টমেন্টের প্রয়োজন নেই। শুধু প্রাথমিকভাবে কিছু রাবার, মণি, রঙ, সুতা ও অন্যান্য হ্যান্ডমেড উপকরণ কিনলেই হবে। বানানো পণ্যগুলো সুন্দরভাবে প্যাকেজিং করলে গ্রাহকের কাছে আকর্ষণ আরও বৃদ্ধি পায়। এতে আপনার ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি হয় এবং পরবর্তীতে আরো অর্ডার পাওয়া সহজ হয়।
আরও পরুনঃঅনলাইনে ইনকাম করার উপায় ২০২৫
অনলাইনে এই ধরনের পণ্য বিক্রি করার জন্য ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন। প্রচারণা ভালোভাবে করলে গ্রাহক সংখ্যা দ্রুত বাড়ে। ছোট উদ্যোগ হলেও ধীরে ধীরে এটি বড় ব্যবসার রূপ নিতে পারে, এবং নিয়মিত আয়ের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে।এই ব্যবসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, আপনি নিজের সময় অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন। এটি বিশেষ করে ছাত্রছাত্রী, গৃহিণী বা পার্টটাইম উদ্যোক্তাদের জন্য উপযোগী। সৃজনশীলতা ও ভালো ডিজাইন থাকলেই বাজারে চাহিদা বেশি থাকে, আর লাভের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
ঘরে তৈরি খাবার বিক্রি
আজকাল অনেক মানুষ রেডিমেড খাবারের উপর নির্ভরশীল। তবে সবাই সবসময় বাইরে গিয়ে খেতে পারে না। ফলে ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবারের চাহিদা সবসময়ই থাকে। বিশেষ করে অফিসগামী মানুষ কিংবা যারা একা থাকে তারা প্রতিদিন ঘরে রান্না করতে পারে না। তাই ঘরে তৈরি খাবার বিক্রি একটি দারুণ উদ্যোগ হতে পারে। এটিও একটি পরীক্ষিত কম খরচে ব্যবসার আইডিয়া।এই ব্যবসা শুরু করতে খুব বেশি খরচ লাগে না। প্রাথমিকভাবে আপনার রান্নার দক্ষতা, কিছু কাঁচামাল আর রান্নার সরঞ্জাম থাকলেই যথেষ্ট। রান্না করা খাবার ডেলিভারির জন্য স্থানীয় কুরিয়ার সার্ভিস বা ফুড ডেলিভারি অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার ব্যবসা দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
বিশেষ করে দুপুরের খাবার বা টিফিন সাপ্লাই করার চাহিদা বেশি। আপনি চাইলে নির্দিষ্ট কিছু খাবারের সেট তৈরি করে অফিস বা হোস্টেলের মানুষদের কাছে সরবরাহ করতে পারেন। পাশাপাশি বিশেষ দিন বা অনুষ্ঠানের জন্য কাস্টম অর্ডার নিলে অতিরিক্ত লাভ করা সম্ভব।সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, খাবারের গুণগত মান বজায় রাখতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রান্নাঘর, স্বাস্থ্যকর উপকরণ এবং স্বাদে ভিন্নতা আনলে ক্রেতারা নিয়মিত গ্রাহকে পরিণত হবে। ফলে ধীরে ধীরে এই উদ্যোগ একটি স্থায়ী আয়ের উৎসে রূপ নেবে।
ছোট স্ক্রিপ্ট ও কনটেন্ট রাইটিং সার্ভিস
ডিজিটাল যুগে কনটেন্ট ক্রিয়েশন বা লেখা ব্যবসা একটি বহুল চাহিদাসম্পন্ন ক্ষেত্র। ছোট উদ্যোগের জন্য এটি একটি খুব ভালো কম খরচে ব্যবসার আইডিয়া। বিশেষ করে ব্লগ, ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া পেজ বা অনলাইন স্টোরের জন্য নিয়মিত লেখা প্রয়োজন হয়। তাই যারা লেখালিখি বা কম্পিউটার দক্ষতা রাখেন, তাদের জন্য এটি সহজে শুরু করা যায়।শুরুতে শুধু একটি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন। প্রাথমিকভাবে আপনার নিজের নেটওয়ার্ক বা অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ছোট প্রকল্প নিতে পারেন। এই ব্যবসায় খরচ কম হলেও ধীরে ধীরে ক্রেতা বাড়লে ভালো আয়ের উৎস হিসেবে এটি কাজ করে।
এই ধরনের কাজের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো সময়ের স্বাচ্ছন্দ্য। আপনি নিজে যখন খুশি কাজ করতে পারবেন এবং সময়ের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে। পাশাপাশি প্রতিটি প্রজেক্ট শেষ করার সাথে সাথে নতুন দক্ষতা অর্জনের সুযোগ থাকে।ভবিষ্যতে চাইলে এই ব্যবসাকে বড় আকারে রূপান্তরিত করা সম্ভব। যেমন, ছোট একটি কনটেন্ট এজেন্সি তৈরি করা বা অনলাইন মার্কেটিং সার্ভিসের সাথে যুক্ত হওয়া যায়। এতে আপনি শুধুমাত্র লেখালিখি নয়, কাস্টমাইজড কনটেন্ট সার্ভিসও দিতে পারবেন, যা আয় আরও বৃদ্ধি করবে।
ছোট লাইব্রেরি বা বুক রেন্টাল সার্ভিস
শিক্ষা ও পড়াশোনার প্রতি মানুষের আগ্রহ দিন দিন বেড়ে চলেছে। অনেক ছাত্রছাত্রী বা পেশাজীবী নতুন বই কিনতে চায় না, তাই বুক রেন্টাল সার্ভিসের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই ১০ হাজার টাকা নিয়ে কি কি ব্যবসা শুরু করা যাই এর মধ্যে ছোট লাইব্রেরি বা বুক রেন্টাল একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।শুরুতে আপনার জন্য দরকার একটি ছোট জায়গা বা রুম, যেখানে বই সংরক্ষণ করা যাবে। প্রাথমিকভাবে জনপ্রিয় পড়াশোনার বই, কমিকস, নভেল এবং প্রফেশনাল বইগুলো কিনে রাখলে ভালো রেসপন্স পাওয়া যায়। প্রাথমিক বিনিয়োগ কম হলেও ধীরে ধীরে গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে আয়ও বাড়ে।
এই ব্যবসার সুবিধা হলো, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ। একবার নিয়মিত গ্রাহক তৈরি হলে তারা নিয়মিত বই ধার করতে আসবে। এছাড়া লাইব্রেরি ব্যবহার করে কম্পিউটার, ইন্টারনেট বা স্টাডি রুম সার্ভিস দেওয়াও সম্ভব। এতে আয় বাড়ানোর সুযোগ থাকে।পরবর্তীতে চাইলে অনলাইন বুক রেন্টালও শুরু করা যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্রাহককে বই অর্ডার করতে দেয়া সম্ভব। এটি ছোট বিনিয়োগে শুরু করা হলেও বড় ব্যবসার রূপ নিতে পারে।
ছোট গার্মেন্টস বা কাপড়ের হোমসেলিং
কাপড়ের ব্যবসা সবসময়ই চাহিদাসম্পন্ন। ছোট স্কেলে গার্মেন্টস বা হোমসেলিং শুরু করা বেশ লাভজনক হতে পারে। এর জন্য একটি ছোট জায়গা বা ঘর যথেষ্ট, যেখানে কাঁচামাল থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত করা যাবে। ছোট আকারে শুরুর ফলে বিনিয়োগ কম থাকে, এবং প্রতিদিন কিছু মাত্রা উৎপাদন করলে ভালো আয়ের সুযোগ তৈরি হয়।প্রাথমিকভাবে প্রচলিত পোশাক যেমন শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট বা স্কার্ট তৈরি করা যেতে পারে। ডিজাইনগুলো যত আকর্ষণীয় এবং ট্রেন্ডি হবে, গ্রাহক তত বেশি আর্কষিত হবে। চাইলে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা যায় বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনলাইনে প্রচার করা যায়।
এই ধরনের ব্যবসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, আপনার উৎপাদনের ক্ষমতা অনুযায়ী বিক্রয় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। প্রথমে ছোট পরিসরে উৎপাদন শুরু করুন, ধীরে ধীরে ক্রেতা সংখ্যা বাড়লে উৎপাদন সম্প্রসারণ করা যায়। এছাড়া ক্রেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় ফিডব্যাক অনুযায়ী পণ্যের মান উন্নয়ন করা সহজ হয়।ভবিষ্যতে চাইলে এই ব্যবসাকে বড় আকারে রূপান্তরিত করা যায়। যেমন একটি ব্র্যান্ড তৈরি করা বা স্থানীয় দোকানের জন্য কনট্রাক্ট ভিত্তিতে পোশাক উৎপাদন করা সম্ভব। এই উদ্যোগ ধীরে ধীরে নিয়মিত আয়ের উৎসে পরিণত হতে পারে।
শেষ কথা
১০ হাজার টাকা নিয়ে কি কি ব্যবসা শুরু করা যাই এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, বিশেষ করে যারা নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে ছোট বিনিয়োগে শুরু করতে চান। এই লেখা থেকে আমরা দেখলাম, ছোট পরিসরে অনলাইন রিসেলার, হোমমেড ফুড ডেলিভারি, হ্যান্ডমেড জুয়েলারি, কনটেন্ট রাইটিং, বুক রেন্টাল এবং ছোট হোমসেলিং গার্মেন্টস এসব উদ্যোগ সহজেই শুরু করা সম্ভব।প্রত্যেকটি ব্যবসাই ছোট মূলধন থেকে শুরু করা যায়, তবে সঠিক পরিকল্পনা ও ধৈর্য ধরে কাজ করতে হবে। নিয়মিত প্রচেষ্টা, মানসম্মত পণ্য বা সার্ভিস এবং গ্রাহকের সন্তুষ্টি নিশ্চিত করা হল সফলতার মূল চাবিকাঠি।
ছোট বিনিয়োগ হলেও সৃজনশীলতা ও কৌশল অনুযায়ী আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো সম্ভব। তাই যারা ভাবছেন ১০ হাজার টাকা নিয়ে কি কি ব্যবসা শুরু করা যাই তাদের জন্য সময় এসেছে উদ্যোগী হওয়া, পরিকল্পনা করা এবং এক্সিকিউশন শুরু করার।এভাবে ছোট উদ্যোগগুলো থেকে ধীরে ধীরে বড় ব্যবসায় রূপান্তর ঘটানো সম্ভব। সঠিক মনোভাব, নিয়মিত প্রচেষ্টা এবং বাজার বোঝার ক্ষমতা থাকলে ১০ হাজার টাকাতেই আপনার একটি লাভজনক ব্যবসা শুরু হয়ে যেতে পারে।
আরও পরুনঃ স্টুডেন্ট ভিসা তৈরি করতে কি কি লাগে



Scroll Tips 24 এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url