অনলাইনে ইংরেজি শেখা কিভাবে শুরু করবেন জেনে নিন

বর্তমানে কর্মজীবনের প্রায় সব ক্ষেত্রেই অনলাইনে ইংরেজি শেখা কিভাবে শুরু করবেন তা জানা অত্যন্ত জরুরি। আপনি কি জানেন, একটি নতুন ভাষা শেখা আপনার মস্তিষ্কের ক্ষমতাও বাড়িয়ে দিতে পারে। 

অনলাইনে-ইংরেজি-শেখা-কিভাবে-শুরু-করবেন

অনেকেই ইংরেজি শেখার কথা ভাবলেও ঠিক কোথা থেকে শুরু করবেন তা বুঝে উঠতে পারেন না। কিন্তু চিন্তার কিছু নেই। ইন্টারনেট এই কাজটি এখন অনেক সহজ করে দিয়েছে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনি ঘরে বসেই আপনার ইংরেজির ভিত মজবুত করতে পারবেন।

পেজ সূচীপত্রঃ অনলাইনে ইংরেজি শেখা কিভাবে শুরু করবেন জেনে নিন

অনলাইনে ইংরেজি শেখা কিভাবে শুরু করবেন

অনলাইনে ইংরেজি শেখা কিভাবে শুরু করবেন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বর্তমান আপনাকে আপনার ইংরেজির স্তরটি যাচাই করতে হবে। আপনি কি একদম নতুন নাকি আগে কিছুটা শিখেছেন এটা জানা জরুরি।বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিনামূল্যে লেভেল টেস্ট দেওয়ার সুযোগ থাকে, যা আপনার দুর্বলতা ও শক্তিমত্তাগুলো ধরিয়ে দেবে। আপনার স্তর জানা থাকলে আপনি এমন কোর্স বা রিসোর্স বেছে নিতে পারবেন, যা আপনার জন্য খুব সহজ বা খুব কঠিন হবে না। সঠিক জায়গা থেকে শুরু করা শেখার আগ্রহ ধরে রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।এই মূল্যায়নের পর আপনার শেখার লক্ষ্যকে সুনির্দিষ্ট করুন। আপনি ঠিক কী জন্য ইংরেজি শিখতে চাইছেনবিদেশ ভ্রমণের জন্য, ভালো চাকরি পাওয়ার জন্য, নাকি শুধুমাত্র সিনেমা বোঝার জন্য? লক্ষ্য যত পরিষ্কার হবে, শেখার পথ তত সহজ হবে এবং আপনি তত বেশি অনুপ্রাণিত থাকবেন। লক্ষ্যকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিন যেমনঃপ্রথম সপ্তাহে শুধু ১০টি ক্রিয়াপদ শিখব। ছোট সাফল্য গুলো আপনাকে এগিয়ে যাওয়ার মানসিক শক্তি দেবে।

শিখতে বসার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় ও জায়গা নির্ধারণ করুন। প্রতিদিন ৩০ মিনিট মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন সপ্তাহে একবার ৫ ঘণ্টা পড়ার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। আপনার পড়াশোনার জায়গাটা যেন শান্ত ও আরামদায়ক হয় সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। এটি আপনার মনকে শেখার জন্য প্রস্তুত করবে এবং মনোযোগ বিক্ষিপ্ত হবে না। রুটিনে ধারাবাহিকতা বজায় রাখাটাই সফলতার মূল চাবিকাঠি।শুরুতেই ব্যাকরণের জটিলতায় না গিয়ে শব্দভান্ডার বাড়ানোয় মনোযোগ দিন। যে কোনো ভাষা যোগাযোগের জন্য শব্দই হলো মূল উপকরণ। প্রতিদিন ৫টি করে নতুন শব্দ শিখুন এবং সেগুলোকে বাক্য ব্যবহারের চেষ্টা করুন। আপনার পছন্দের বিষয়বস্তু (যেমন: খেলা, রান্না বা ভ্রমণ) নিয়ে পড়তে বা দেখতে শুরু করুন। মনে রাখবেন, ভুল করা স্বাভাবিক, কিন্তু সেই ভুল থেকে শিখে এগিয়ে যাওয়াই হলো সেই প্রশ্নের কার্যকর উত্তর।

সঠিক রিসোর্স বেছে নিন

অনলাইনে ইংরেজি শেখা কিভাবে শুরু করবেন তার প্রথম ধাপ পেরিয়ে আসার পর, আপনার সামনে আসে সঠিক রিসোর্স বা শেখার উপকরণ বেছে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ। ইন্টারনেট হলো তথ্যের মহাসাগর, যেখানে Duolingo, Coursera, YouTube, এবং বিভিন্ন ব্লগসাইট রয়েছে। এত বিকল্পের মধ্যে থেকে এমন প্ল্যাটফর্ম বেছে নিন যা আপনার শেখার স্টাইল এবং সময়সূচির সঙ্গে মানানসই। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি ভিডিও দেখে দ্রুত শেখেন, তবে ইউটিউবের টিউটোরিয়াল এবং টেড টকস আপনার জন্য সেরা হতে পারে।প্রথমদিকে পেইড কোর্সের দিকে না গিয়ে, বিনামূল্যে উপলব্ধ ভালো প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করুন। বিবিসি লার্নিং ইংলিশ (BBC Learning English) বা ভয়েস অফ আমেরিকা (VOA) এর মতো ওয়েবসাইটগুলো নিয়মিত, মানসম্মত এবং সঠিক উচ্চারণের কনটেন্ট সরবরাহ করে। এছাড়া, মফিজুর রহমান বা অন্য অভিজ্ঞ দেশি শিক্ষকদের ভিডিওগুলোও খুব সহায়ক হতে পারে। একটি টুল বা একটি রিসোর্সকে ধরে এগোনো বুদ্ধিমানের কাজ; একসাথে অনেকগুলো টুল ব্যবহার করলে আপনার মনোযোগ নষ্ট হতে পারে।

আপনি যদি গেম বা কুইজের মাধ্যমে শিখতে পছন্দ করেন, তবে মোবাইল অ্যাপস, যেমন Memrise বা HelloTalk ব্যবহার করতে পারেন। HelloTalk-এর মতো অ্যাপ আপনাকে অন্য ভাষাভাষী মানুষের সাথে কথা বলার সুযোগও করে দেয়, যা প্র্যাকটিসের জন্য খুব দরকারি। রিসোর্স নির্বাচন করার আগে রিভিউ বা অন্যদের মতামত দেখে নেওয়া জরুরি, যাতে আপনি সময়ের অপব্যবহার না করেন। এমন রিসোর্স বেছে নিন যা আপনাকে শুধু নিয়ম শেখায় না, বরং অনুশীলনের সুযোগও দেয়।এই রিসোর্সগুলো বেছে নেওয়ার সময় আপনার লক্ষ্য মনে রাখুন। আপনি যদি একাডেমিক ইংরেজি শিখতে চান, তবে IELTS বা TOEFL-এর প্রস্তুতিমূলক কোর্স বেছে নিতে হবে। আর যদি আপনি শুধু দৈনন্দিন জীবনের কথোপকথনের জন্য শিখতে চান, তবে কথোপকথন ভিত্তিক  অ্যাপগুলো ব্যবহার করা উচিত। আপনার নির্বাচিত রিসোর্সগুলো যেন আপনাকে নিয়মিত অগ্রগতি পরীক্ষা করার সুযোগ দেয়।

আরও পরুনঃস্টুডেন্ট ভিসা তৈরি করতে কি কি লাগে

শব্দভান্ডার বাড়াতে মনোযোগ দিন 

অনলাইনে ইংরেজি শেখার সহজ উপায়গুলোর মধ্যে শব্দভান্ডার কে শক্তিশালী করা অন্যতম প্রধান। কারণ শব্দ হলো একটি ভাষার মূল ভিত্তি; আপনি যতই ব্যাকরণ জানেন পর্যাপ্ত শব্দ না থাকলে আপনি যোগাযোগ করতে পারবেন না। প্রতিদিন একটি লক্ষ্য স্থির করুন, যেমন ৫ থেকে ১০টি নতুন শব্দ শেখা। এই শব্দগুলো শুধু মুখস্থ না করে সেগুলোকে ছোট ছোট বাক্যে প্রয়োগ করার চেষ্টা করুন, এতে শব্দটি আপনার স্মৃতিতে স্থায়ী হবে। শব্দ শেখার এই পদ্ধতিটি আপনাকে আরও সাবলীলভাবে কথা বলতে সাহায্য করবে।নতুন শব্দগুলো শেখার সময় সেগুলোর প্রতিশব্দ এবং বিপরীত শব্দ জেনে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। এই অভ্যেস আপনার শব্দ প্রয়োগের ক্ষমতাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে। ভালো হবে যদি আপনি কোনো একটি শব্দের বিভিন্ন রূপও জেনে নিন যেমনঃ বিশেষ্য , বিশেষণ , ও ক্রিয়াপদ । একটি ডেডিকেটেড নোটবুক বা ডিজিটাল ফ্ল্যাশকার্ড অ্যাপ (যেমন Anki) ব্যবহার করুন। সেখানে নতুন শেখা শব্দগুলো লিখে রাখুন এবং নিয়মিত সেগুলো ফ্ল্যাশকার্ডের মাধ্যমে রিভাইজ করুন।

যে শব্দগুলো আপনার দৈনন্দিন জীবনে বেশি ব্যবহার হবে, সেগুলোকে অগ্রাধিকার দিন। যেমন কর্মক্ষেত্র, শখ, বা আপনার পছন্দের বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত শব্দ। আপনি যদি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেন, তবে প্রযুক্তির পরিভাষাগুলো আগে শিখুন। সিনেমা বা সংবাদ দেখার সময় নতুন কোনো শব্দ শুনলে বা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে সেটার অর্থ খুঁজে নিন। এটি আপনার শেখার প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকরী করে তুলবে।শব্দ শেখার জন্য রুট লার্নিং  পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। এর মাধ্যমে শব্দের মূল অংশ (Root) জানা থাকলে, একই রুট থেকে তৈরি হওয়া অন্যান্য শব্দের অর্থও অনুমান করা সহজ হয়ে যায়। এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিটি আপনার শব্দ মনে রাখার ক্ষমতাকে মজবুত করবে। নতুন শব্দকে কখনোই একটি বিচ্ছিন্ন তথ্য হিসেবে না দেখে, তাকে একটি বাক্যের ভেতরে বসিয়ে শেখার চেষ্টা করুন।

ব্যাকরণের মূল ভিত্তি বুঝুন

অনেকেই ব্যাকরণকে কঠিন মনে করেন, কিন্তু সত্যি বলতে এটি মোটেও জটিল নয়। ব্যাকরণ কেবল ভাষার একটি পথনির্দেশক, যা আমাদের বাক্য গঠনকে সুগঠিত করে। অবশ্যই, ভালোভাবে যোগাযোগ করতে শব্দভান্ডার প্রয়োজন, কিন্তু বাক্যকে সঠিক ও বোধগম্যভাবে সাজাতে ব্যাকরণের মূল নিয়মগুলো জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।অনলাইনে ইংরেজি শেখার সময় গভীরভাবে না গিয়ে, প্রথমে টেন্স, বেসিক পার্টস অফ স্পিচ  এবং সাধারণ বাক্য গঠনের ওপর মনোযোগ দিন। এই ভিত্তি মজবুত হলে কথোপকথন বা লেখার সময় আর দ্বিধায় পড়তে হবে না। জটিল ব্যাকরণ বইগুলো এড়িয়ে চলুন। তার পরিবর্তে, ইউটিউবে বিভিন্ন শিক্ষকের সংক্ষিপ্ত ও সহজবোধ্য টিউটোরিয়াল দেখুন।নতুন কোনো নিয়ম শিখলে তা কেবল খাতায় লিখে রাখবেন না, বরং ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। উদাহরণস্বরূপ, যখন আপনি Present Continuous Tense শিখছেন, তখন “আমি এখন কফি খাচ্ছি” এর মতো সাধারণ বাক্য তৈরি করুন। এই অভ্যাস আপনার শেখাকে আরও ব্যবহারিক করে তুলবে।

ব্যাকরণ শেখার সময় অতিরিক্ত তথ্য দিয়ে নিজেকে বিভ্রান্ত করবেন না। অনেক ব্যতিক্রম আছে যা আপাতত জানা জরুরি নয়। লক্ষ্য করুন, আপনি ৯০% ক্ষেত্রে সঠিক হতে পারছেন কি না। শেখা নিয়মগুলো যেন আপনার কথোপকথন বা লেখার গতিকে বাধা না দেয়, বরং সহায়ক হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন মাত্র ১৫ মিনিট মনোযোগ দিয়ে অনুশীলন করাটাই যথেষ্ট।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্যাকরণকে আলাদা বা বিচ্ছিন্নভাবে না দেখা। যখন কোনো আর্টিকেল পড়ছেন বা ভিডিও দেখছেন, বাক্যগুলোর গঠন লক্ষ্য করুন। দেখুন বক্তা কীভাবে বিভিন্ন টেন্স ব্যবহার করছেন, অতীতে বা ভবিষ্যতে কীভাবে কথা বলা হচ্ছে। এই পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা গড়ে উঠলে, অজান্তেই আপনার ব্যাকরণের জ্ঞান বেড়ে যাবে। মনে রাখুন, ব্যাকরণ শেখার মূল লক্ষ্য শুধু পরীক্ষা পাশ করা নয়, বরং নিজেকে আরও স্পষ্টভাবে ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রকাশ করা।

প্রতিদিন শোনার অভ্যাস করুন 

একটা নতুন ভাষা শেখার ক্ষেত্রে কানে শোনার গুরুত্ব অনেকে বুঝে উঠতে পারেন না, অথচ এটিই হলো যেকোনো ভাষার মূল প্রবেশদ্বার। আমরা ছোটবেলায় শুনে শুনেই কিন্তু আমাদের মাতৃভাষা শিখেছি। তাই অনলাইনে ইংরেজি শেখার সহজ উপায় হলো প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় ইংরেজি শোনার অভ্যাস তৈরি করা। আপনি ইংরেজি গান, পডকাস্ট, অথবা নিউজ বুলেটিন যেমন বিবিসি বা ভয়েস অফ আমেরিকা শুনতে পারেন। শুরুতে হয়তো সব কথা বুঝতে পারবেন না, তবে আপনার কান ইংরেজির উচ্চারণ এবং ছন্দের সাথে পরিচিত হবে।আপনার পছন্দের বিষয়গুলো দিয়ে শুরু করা বুদ্ধিমানের কাজ। যেমন, আপনি যদি সাইন্স ফিকশন ভালোবাসেন, তবে সেই ধরনের পডকাস্ট শুনুন। প্রথমে সাবটাইটেল বা ট্রান্সক্রিপ্ট দেখে শুনে শুরু করুন। যখন আপনার মনে হবে যে আপনি কিছুটা বুঝতে পারছেন, তখন সাবটাইটেল ছাড়াই শোনার চেষ্টা করুন। প্রথমবার না বুঝলেও হতাশ হবেন না, কারণ আপনার মস্তিষ্ক তখনো ভাষাটির গতি ধরতে শিখছে। আপনি একই অডিও বা ভিডিও বারবার শুনলে সেটি আপনাকে আরও ভালো করে বুঝতে সাহায্য করবে।

শুনে শেখার সময় শুধুমাত্র ইংরেজি শেখার মানসিকতা নিয়ে বসে না থেকে, বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে উপভোগ করুন। একটি নতুন সিরিজ বা সিনেমা দেখতে বসুন। এতে আপনার শেখার প্রক্রিয়াটি আর একঘেয়ে লাগবে না, বরং আনন্দের খোরাক হবে। এমন কনটেন্ট দেখুন যেখানে অভিনেতারা স্পষ্ট উচ্চারণে কথা বলছেন। যদি কোনো শব্দ বুঝতে না পারেন, তবে সেই অংশটি পজ করে শব্দটি খুঁজে নিন এবং সেটিকে আপনার নোটবুকে লিখে ফেলুন।নিয়মিত শোনার অভ্যাস আপনার উচ্চারণেও সরাসরি প্রভাব ফেলবে। একজন নেটিভ স্পিকার কীভাবে একটি শব্দ উচ্চারণ করেন, সেটি আপনি শুনতে শুনতে নিজের অজান্তেই আয়ত্ত করতে শুরু করবেন। এছাড়াও, বাক্য গঠনে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রাকৃতিক টোন বা ইনটোনেশন সম্পর্কে আপনার ধারণা হবে। এভাবে অল্প অল্প করে শোনাকে আপনার দৈনন্দিন জীবনের অংশ করে নিলে শেখার কাজটি অনেক মসৃণ হয়ে যাবে।

আরও পরুনঃ মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের ১০টি উপায়

কথা বলার ভয় দূর করুন 

ইংরেজি শেখার সবচেয়ে বড় বাধা হলো কথা বলার ভয় বা অস্বস্তি। এই ভয় কাটানো ছাড়া অনলাইনে ইংরেজি শেখার সহজ কোনো উপায় নেই। আপনি যতই ব্যাকরণ বা শব্দভান্ডার জানুন না কেন, মুখ না খুললে শেখা কখনও সম্পূর্ণ হবে না। তাই, প্রথমে নিজের ঘরে আয়নার সামনে দাঁড়ান এবং নিজের পছন্দের কোনো বিষয় নিয়ে ইংরেজিতে কথা বলার চেষ্টা করুন। এতে আপনি নিজের কণ্ঠ শুনতে পাবেন এবং ভুলগুলো ধরার সুযোগ পাবেন। প্রতিদিন মাত্র পাঁচ মিনিট হলেও এই অভ্যাস চালিয়ে যান।ভয় কাটানোর আরও একটি কার্যকরী উপায় হলো বন্ধু বা সহকর্মীদের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলা। যদি চারপাশে কেউ ইংরেজি জানে না, তবে বিভিন্ন অনলাইন ল্যাঙ্গুয়েজ এক্সচেঞ্জ অ্যাপ বা ফোরামের সাহায্য নিতে পারেন। HelloTalk বা Tandem-এর মতো অ্যাপগুলোতে আপনি নেটিভ স্পিকারদের খুঁজে পাবেন, যারা আপনার মাতৃভাষা শিখতে আগ্রহী। আপনি তাদের বাংলা শেখাতে পারেন এবং বিনিময়ে তাদের সঙ্গে ইংরেজি প্র্যাকটিস করতে পারেন। এটি আসলে দুই পক্ষের জন্যই লাভজনক একটি ব্যবস্থা।

কথা বলার সময় মনে রাখবেন, ভুল করা শেখার অংশ। ভুল হচ্ছে ভেবে থেমে যাবেন না বা নিজেকে কঠোরভাবে বিচার করবেন না। একজন নেটিভ স্পিকারও মাঝে মাঝে ভুল করতে পারে, তাই এটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। মূল লক্ষ্য হলো আপনার বক্তব্য স্পষ্টভাবে বোঝানো। ভুল হলে হেসে ফেলুন এবং সেটাকে ঠিক করে আবার চেষ্টা করুন। যত বেশি ভুল করবেন, তত দ্রুত সঠিক ব্যবহার শিখবেন।শুরুর দিকে ছোট ছোট বাক্য বা দৈনন্দিন কথোপকথন দিয়ে শুরু করুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনার দিনের রুটিন, আবহাওয়া বা প্রিয় খাবার নিয়ে কথা বলুন। যখনই কথা বলার সুযোগ পাবেন, তা কাজে লাগান। এমনকি অনলাইন গেম খেললেও ভয়েস চ্যাটে কথা বলার চেষ্টা করুন। এই নিয়মিত অনুশীলনই শেষ পর্যন্ত আপনার ফ্লুয়েন্সি বা সাবলীলতা বাড়াবে।

লেখার নিয়মিত অনুশীলন করুন 

ইংরেজিতে সাবলীল হওয়ার জন্য শুধু কথা বলা নয়, লিখার অনুশীলনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লেখা আপনাকে শেখা ব্যাকরণ ও নতুন শব্দভান্ডার ব্যবহার করার বাস্তব সুযোগ দেয়। প্রতিদিন মাত্র ১০ মিনিট হলেও কিছু না কিছু ইংরেজিতে লিখার অভ্যাস তৈরি করুন। আপনি আপনার দিনের ঘটনা, প্রিয় সিনেমা, কোনো গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের সারাংশ যে কোনো কিছু লিখতে পারেন। এই অভ্যাসটি আপনার বাক্য গঠনকে আরও মজবুত করবে।সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো ব্যক্তিগত ডায়েরি লেখা। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে সারাদিনের ঘটনাগুলো ইংরেজিতে লেখার চেষ্টা করুন। এতে আপনি এমন শব্দ ও বাক্যাংশ ব্যবহার করতে বাধ্য হবেন যা দৈনন্দিন জীবনে কাজে আসে। এছাড়া এটি স্মৃতিশক্তিকেও উন্নত রাখে। ডায়েরি লেখার সময় নির্ভুলতার চেয়ে সাবলীলতার দিকে বেশি মনোযোগ দিন। ভুল হলে হোক, তবে লেখা যেন থেমে না যায়।

অনলাইনে বিভিন্ন ব্লগ বা ফোরাম আছে যেখানে ইংরেজিতে মন্তব্য করার সুযোগ থাকে। আপনার পছন্দের ভিডিও বা আর্টিকেলের নিচে ইংরেজিতে মন্তব্য করুন। এটি শুধু আপনার লেখা অন্যদের কাছে পৌঁছে দেবে না, ফিডব্যাক পেতে সাহায্য করবে। ফিডব্যাক এবং অন্যদের লেখা দেখে আপনি নতুন কিছু শিখতেও পারবেন।লেখার অনুশীলনের জন্য এখন অনেক AI টুলও ব্যবহার করা যায়, যেমন Grammarly। এই ধরনের টুলগুলো ব্যাকরণগত ভুল ধরিয়ে দেয়। তবে পুরোপুরি টুলের উপর নির্ভর না করে, নিজের লেখা নিজেই পড়ুন। দেখুন বাক্যগুলো পড়তে বা শুনতে কেমন লাগছে। লক্ষ্য করুন, লেখা স্বাভাবিক এবং সহজবোধ্য হোক। লেখার মাধ্যমে আপনার চিন্তাভাবনাগুলোও আরও সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো সম্ভব হবে।

শেখার জন্য সময়কে গুরুত্ব দিন

ভাষা শেখার পুরো প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। অনলাইনে ইংরেজি শেখার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো দৈনিক রুটিনে শেখার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করা এবং সেটিকে কঠোরভাবে মানা। সপ্তাহে একদিন ৫ ঘণ্টা পড়া, প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট মনোযোগ দিয়ে পড়ার চেয়ে কম কার্যকর। কারণ আমাদের মস্তিষ্ক ছোট ছোট বিরতিতে প্রাপ্ত তথ্য দ্রুত গ্রহণ করে এবং সেগুলোকে দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে রূপান্তরিত করে। তাই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অপরিহার্য।আপনি কখন সবচেয়ে সতেজ থাকেন, তা খুঁজে বের করুন। আপনি কি সকালে ঘুম থেকে উঠে দ্রুত শিখতে পারেন, নাকি রাতে কাজ শেষে মনোযোগ ভালো থাকে? সেই সময়টিকে বেছে নিন এবং এটিকে আপনার পড়ার সময় হিসেবে নির্ধারণ করুন। এই সময়ে মোবাইল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য কোনো মনোযোগ নষ্টকারী বিষয় থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। যদি পুরো সময় দিতে না পারেন, তবে মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য একটি পডকাস্ট শুনুন বা ৫টি শব্দ রিভাইজ করুন।

শেখার সময়কে কেবল পড়া বা লেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখবেন না। আপনার প্রিয় ইংরেজি সিরিজ দেখার সময় বা গান শোনার সময়কেও শেখার অংশ হিসেবে ব্যবহার করুন। এটিকে চাপ মনে না করে, বরং নিজের ব্যক্তিগত উন্নতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ হিসেবে দেখুন। এই পদ্ধতি শেখাকে আরও মজাদার এবং টেকসই করবে।একটি ছোট ক্যালেন্ডার বা ট্র্যাকার ব্যবহার করে প্রতিদিনের অনুশীলনের পরে টিক চিহ্ন দিন। এই দৃশ্যমান অগ্রগতি মানসিকভাবে উৎসাহ দেবে এবং শেখার অভ্যাসকে একটি শক্তিশালী রুটিনে পরিণত করবে। যদি কোনোদিন কোনো কারণে গ্যাপ পড়ে যায়, হতাশ হবেন না। পরের দিন আবার শুরু করুন। মনে রাখবেন, শেখা হলো একটি অভ্যাস, যা প্রতিদিন একটু একটু করে তৈরি করতে হয়।

অনলাইনে-ইংরেজি-শেখা-কিভাবে-শুরু-করবেন

ইন্টারেক্টিভ কোর্স ও টিউটর খুঁজুন

শুধুমাত্র নিজে নিজে শেখার ওপর ভরসা না রেখে, একজন ভালো শিক্ষক বা ইন্টারেক্টিভ কোর্সের সাহায্য নেওয়া অনলাইনে ইংরেজি শেখার ক্ষেত্রে একটি কার্যকর এবং দ্রুত পথ। যারা একদম গোড়া থেকে শুরু করছেন, তাদের জন্য কাঠামোবদ্ধ কোর্স খুবই দরকারি। এই কোর্সগুলিতে একটা নির্দিষ্ট সিলেবাস ধরে এগোনো হয়, যেখানে আপনার অগ্রগতি মাপার জন্য কুইজ বা পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকে। ফলে আপনি পরিষ্কার বুঝতে পারেন যে আপনি কতটা শিখছেন এবং কোন জায়গাগুলোতে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া দরকার।অন্যদিকে, ব্যক্তিগত টিউটরের কাছে পড়া হলো নিজের দুর্বলতাগুলোকে নির্মূল করার সবচেয়ে শক্তিশালী উপায়। অনলাইন টিউটররা খুব দ্রুত আপনার উচ্চারণের ভুল, বাক্য গঠনের দুর্বলতা অথবা ব্যাকরণের সমস্যাগুলো ধরতে পারেন এবং ঠিক সেগুলোর ওপর জোর দিয়ে আপনাকে প্র্যাকটিস করাতে পারেন। তারা আপনার ব্যক্তিগত প্রয়োজন অনুযায়ী শেখানোর পদ্ধতি তৈরি করেন। এই ক্ষেত্রে কিছুটা খরচ হলেও, আপনার শেখার গতি এবং নির্ভুলতা বাড়াতে এটি দীর্ঘ মেয়াদে একটি চমৎকার বিনিয়োগ।

ভালো কোর্স বা টিউটর বেছে নেওয়ার আগে অবশ্যই তাদের আগের শিক্ষার্থীদের রিভিউ মন দিয়ে দেখুন। তারা কোন বিষয়টার ওপর বেশি জোর দেন কথা বলা, নাকি লেখালেখি? আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করুন। এখন অনেক ওয়েবসাইটেই ছোট ছোট গ্রুপে লাইভ ক্লাস করার সুযোগ থাকে, যেখানে আপনি অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে শিখতে পারবেন। এই ধরনের আলাপ-আলোচনা বা ইন্টার‍্যাকশন শেখার প্রক্রিয়াটাকে আরও বাস্তব এবং অনেক বেশি মজাদার করে তোলে।কোর্স বা শিক্ষক নির্বাচনের সময় এটাও যাচাই করে নিন যে তাদের শেখানোর স্টাইলটা আপনার কাছে স্বস্তিদায়ক মনে হচ্ছে কি না। কেউ হয়তো খুব কড়া নিয়মের মধ্যে পড়াতে পছন্দ করেন, আবার কেউ কেউ সহজভাবে আলোচনার মাধ্যমে শেখান। মনে রাখবেন, একটি ভালো কোর্স বা টিউটর কেবল আপনাকে তথ্যই দেবেন না, বরং আপনার আত্মবিশ্বাসকেও অনেকটা বাড়িয়ে দেবেন, যা সাবলীলভাবে ইংরেজিতে কথা বলার জন্য অপরিহার্য।

শেখা জ্ঞান বাস্তব জীবনে ব্যবহার করুন

অনলাইনে ইংরেজি শেখা শুরু করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো যা শিখছেন, তা সঙ্গে সঙ্গে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা। আপনি যত নতুন শব্দ বা ব্যাকরণের নিয়মই শিখুন না কেন, সেগুলোকে কাজে না লাগালে আপনার মস্তিষ্ক সেগুলোকে অপ্রয়োজনীয় মনে করে ভুলে যাবে। তাই, প্রতিটি নতুন জ্ঞানকে আপনার দৈনন্দিন কাজের সঙ্গে জুড়ে দিন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি নতুন কোনো ইংরেজি রেসিপি পড়েন, তবে সেটি রান্না করার চেষ্টা করুন।আপনার স্মার্টফোন বা ল্যাপটপের ভাষা ইংরেজিতে পরিবর্তন করে দিন। প্রথম দিকে কিছুটা সমস্যা হলেও, ধীরে ধীরে আপনি বিভিন্ন সেটিংস এবং নোটিফিকেশন বুঝতে শিখবেন। আপনার ইমেইল বা টেক্সট মেসেজগুলোও ইংরেজিতে লেখা শুরু করুন, এমনকি যদি প্রাপক বাংলাভাষী হন। এই সামান্য পরিবর্তনগুলো আপনার মস্তিষ্ককে সব সময় ইংরেজির সংস্পর্শে রাখবে, যা শেখার প্রক্রিয়াকে আরও গভীর করবে।

প্রতিদিন অন্তত একবার নিজেকে চ্যালেঞ্জ করুন। এটি হতে পারে ইংরেজিতে লেখা কোনো প্রবন্ধের সারাংশ লেখা, অথবা কোনো আন্তর্জাতিক সংবাদ দেখে সেটার ওপর আপনার মতামত তৈরি করা। এই চ্যালেঞ্জগুলো আপনাকে কেবল মুখস্থ করা থেকে সরিয়ে এনে সৃজনশীলভাবে ভাষা ব্যবহার করতে শেখাবে। এই ধরনের ছোট ছোট অভ্যাসগুলো আপনার আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তুলবে, যা কেবল ক্লাসরুমে শেখার মাধ্যমে সম্ভব নয়।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আপনার পছন্দের কোনো ইংরেজিতে লেখা কমিউনিটিতে যোগ দিন। সেখানে আপনার আগ্রহের বিষয়ে ইংরেজিতে প্রশ্ন করুন বা আলোচনা করুন। মনে রাখবেন, ভাষা শেখার মূল উদ্দেশ্য হলো যোগাযোগ স্থাপন করা। তাই শেখা জ্ঞানকে ভয় না পেয়ে মানুষের সাথে কথা বলার এবং লেখার ক্ষেত্রে ব্যবহার করুন। এই ব্যবহারিক প্রয়োগই আপনার শেখার প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ করে তুলবে।

শেষ কথাঃঅনলাইনে ইংরেজি শেখা কিভাবে শুরু করবেন

মনে রাখবেন, অনলাইনে ইংরেজি শেখা কিভাবে শুরু করবেন তার উত্তর আপনার ধারাবাহিকতা এবং ইচ্ছাশক্তির উপর নির্ভর করে। আপনি যদি প্রতিদিন কিছুটা সময় দেন এবং উপরে দেওয়া ১০টি কার্যকর টিপস প্র্যাকটিস করেন, তবে আপনার ইংরেজি ভাষার দক্ষতা খুব দ্রুতই উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। শেখার এই যাত্রাটিকে চাপ না মনে করে, একটি মজাদার চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করুন। তাই আর দেরি না করে আজ থেকেই আপনার এই গুরুত্বপূর্ণ শেখার অভ্যাসটি শুরু করে দিন। এই প্র্যাকটিক্যাল টিপসগুলো অনুসরণ করলে আপনি নিশ্চিতভাবে সফল হবেন।

আরও পরুনঃমেয়েদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Scroll Tips 24 এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url