ভালোভাবে পড়াশোনা করার ৭টি কার্যকরী টিপস
শুধু বেশি সময় বই খুলে বসে থাকলেই ভালো ফল পাওয়া যায় না। পড়াশোনায় সাফল্য পেতে হলে প্রয়োজন সঠিক কৌশল, সুশৃঙ্খল পরিকল্পনা ও ধারাবাহিক প্রচেষ্টা। অনেক সময় আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়লেও পরীক্ষার সময় দেখি, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় নেই।
এর কারণ পরিকল্পনার অভাব এবং ভুল পড়ার পদ্ধতি। এখানে দেওয়া হলো ৭টি কার্যকরী টিপস, প্রতিটি পয়েন্টে বিস্তারিত ব্যাখ্যাসহ।
পেজ সূচিপত্রঃভালোভাবে পড়াশোনা করার ৭টি কার্যকরী টিপস
ভালোভাবে পড়াশোনা করার ৭টি কার্যকরী টিপস
পড়াশোনার জন্য সুস্পষ্ট পরিকল্পনা
পড়াশোনায় সফল হতে চাইলে প্রথমেই একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন। পরিকল্পনা ছাড়া পড়লে অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় বিষয় পড়া হয়, আবার গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ পড়ে যায়। এতে পড়াশোনার মানও কমে যায়।
একটি স্টাডি প্ল্যান তৈরি করুন যেখানে সপ্তাহের প্রতিদিনের পড়াশোনার বিষয়, অধ্যায় এবং সময় নির্দিষ্ট থাকবে। কোন বিষয়ে আপনি দুর্বল, সেটি চিহ্নিত করে তাতে বেশি সময় দিন। এইভাবে নিয়মিত পরিকল্পনা মেনে পড়াশোনা করলে পরীক্ষার আগে অযথা চাপ তৈরি হবে না।
আরও পড়ুনঃ সাধারণ রোগ ও তাদের ঘরোয়া চিকিৎসা
ছোট ছোট সেশনে পড়াশোনা
ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটানা পড়া শুধু ক্লান্তিই বাড়ায় না, বরং তথ্য মনে রাখার ক্ষমতাও কমিয়ে দেয়। দীর্ঘ সময় বসে পড়লে মনোযোগ ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়, আর পড়াশোনা অকার্যকর হয়ে পড়ে।
পড়াশোনাকে ২৫-৩০ মিনিটের ছোট সেশনে ভাগ করুন এবং প্রতিটি সেশনের পর ৫-১০ মিনিট বিশ্রাম নিন। বিরতির সময় হালকা হাঁটা, পানি পান বা চোখ বন্ধ করে আরাম নিলে মন সতেজ হয়ে যায় এবং পরবর্তী সেশনে মনোযোগ বেড়ে যায়।
নিজের ভাষায় নোট নেওয়া
শুধু বই পড়ে গেলে মনে রাখা অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়, বিশেষ করে দীর্ঘ সময় পরে। বইয়ের ভাষা জটিল হলে পরীক্ষার সময় গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট মনে করাও কঠিন হয়।তাই পড়ার সময় গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো নিজের ভাষায় লিখে নোট তৈরি করুন।
নোট লেখার সময় রঙিন কলম বা হাইলাইটার ব্যবহার করলে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো দ্রুত খুঁজে পাওয়া সহজ হয়। চাইলে মাইন্ড ম্যাপ বা চার্ট বানিয়ে পড়া বিষয়গুলো ভিজ্যুয়াল আকারে সাজাতে পারেন, যা মনে রাখার ক্ষমতা দ্বিগুণ করে দেয়।
নিয়মিত রিভিশনের অভ্যাস
যতই পড়ুন না কেন, নিয়মিত রিভিশন ছাড়া সেই তথ্য বেশিদিন মনে রাখা সম্ভব নয়। অনেকেই পরীক্ষার আগে একসাথে সব রিভিশন করার চেষ্টা করেন, কিন্তু এতে চাপ বেড়ে যায় এবং অনেক কিছু বাদ পড়ে যায়।
প্রতিদিন অল্প অল্প করে পুরনো পড়া ঝালিয়ে নিন। সপ্তাহে অন্তত একবার পুরো পড়া বিষয়গুলোর একটি বড় রিভিশন দিন। এই পদ্ধতিতে পড়া তথ্য দীর্ঘ সময় মনে থাকবে এবং পরীক্ষার আগে নতুন করে শেখার চেয়ে শুধু ঝালানোই যথেষ্ট হবে।
মনোযোগ ধরে রাখা
পড়ার সময় মোবাইল, সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি বা গেমসের মতো বিষয় মনোযোগ নষ্ট করে দেয়। মনোযোগ হারালে যতই পড়ুন, ফল তেমন আসবে না।পড়াশোনার সময় এসব মনোযোগ নষ্টকারী জিনিস থেকে দূরে থাকুন। প্রয়োজনে মোবাইল সাইলেন্ট মোডে রেখে দিন বা অন্য ঘরে রাখুন। অনলাইনে পড়লে কেবল পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ব্যবহার করুন।
প্রশ্ন সমাধান করার অভ্যাস
শুধু মুখস্থ করলেই পরীক্ষায় ভালো ফল আসে না। পরীক্ষার প্রশ্নের ধরন না বুঝে পড়াশোনা করলে অনেক সময় প্রস্তুতি অসম্পূর্ণ থেকে যায়।আগের বছরের প্রশ্নপত্র সমাধান করুন, মডেল টেস্ট দিন এবং নিজের সময় ব্যবস্থাপনা অনুশীলন করুন। এতে শুধু আত্মবিশ্বাসই বাড়বে না, বরং পরীক্ষার সময় প্রশ্নের উত্তর দিতে গতি ও নির্ভুলতা দুটোই উন্নত হবে।
ঘুম ও পুষ্টিকর খাবার
শরীর ও মস্তিষ্ক সুস্থ না থাকলে যতই পড়ুন, কাজে আসবে না। ঘুমের অভাবে মনোযোগ কমে যায়, আর পুষ্টিহীন খাবার খেলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন, পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং পুষ্টিকর খাবার খান। শাকসবজি, ফল, ডিম, মাছের মতো খাবার পড়াশোনার জন্য মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। জাঙ্ক ফুড কমিয়ে দিলে দীর্ঘমেয়াদে মনোযোগ ও স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে।
শেষ কথা:ভালোভাবে পড়াশোনা করার ৭টি কার্যকরী টিপস
পড়াশোনা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এখানে কোনো শর্টকাট নেই, কিন্তু সঠিক পদ্ধতিতে চেষ্টা করলে ফলাফল দ্রুত আসবে। আজ থেকেই এই টিপসগুলো মেনে চলা শুরু করুন দেখবেন পড়াশোনায় মনোযোগ, স্মরণশক্তি ও আত্মবিশ্বাস সবই বেড়ে গেছে।
আরও পড়ুনঃ BCS যাত্রা (২০২৫ আপডেট ভার্সন)
Scroll Tips 24 এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url